আলিফ হোসেন,তানোরঃ রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার সোনালী ব্যাংক শাখা থেকে ঋণ গ্রহণে গ্রাহকের কাছে থেকে অতিরিক্ত অর্থ-আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভূক্তভোগী উপজেলার চান্দলাই পরগনা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক গোলম শারওয়ার মুরশেদ গত ৪ ফেব্রুয়ারী সোনালী ব্যাংক রাজশাহী প্রধান কার্যালয়ের জেনারেল ম্যানেজারের (জিএম) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। এবং অভিযোগের অনুলিপি বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদুক) রাজশাহী বরাবর প্রেরণ করেছেন।
অভিযোগে প্রকাশ, চাঁন্দলাই পরগনা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক গোলাম শারওয়ার মুরশেদ বিগত ২০২৩ সালের ২৫ নভেম্বর সোনালী ব্যাংক গোদাগাড়ী শাখা থেকে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা পারিবারিক প্রয়োজনে (চাকরির বেতনের হিসাব নম্বর-
৪৬০৮৬৩৪০২০৯৪৪) থেকে
ঋণ গ্রহণের জন্য আবেদন করেন। আবেদন ফরম বাবদ ৮৩০ টাকা নেন ঋণ অনুমোদন কর্মকর্তা আশরাফ আলী। এবং বলেন ঋণের টাকা গ্রহণের সময় আরো এক হাজার ১৫০ টাকা দিতে হবে। কিন্তু তিনি যেদিন ঋণের টাকা গ্রহন করেন সেদিন ঋণ অনুমোদন কর্মকর্তা আশরাফ আলী ব্যাংকে অনুপস্থিত ছিলেন। ফলে ব্যাংক ম্যানেজার সাইফুল ইসলামের মাধ্যমে কাগজপত্র ইস্যু করে ২০২৩ সালের ২০ ডিসেম্বর ঋণের টাকা গ্রহন করেন। এমতাবস্থায় পরবর্তীতে ২০২৪ সালের ১০ জানুয়ারী ঋণের মাসিক কিস্তি কর্তন করে অবশিষ্ট বেতনের টাকা উত্তোলনের জন্য ব্যাংকে গেলে তাকে জানানো হয় ব্যাংকে তার হিসাব নম্বর বন্ধ রয়েছে। এদিকে বিষয়টি ম্যানেজারকে জানানো হলে তিনি ঋণ অনুমোদন কর্মকর্তা আশরাফ আলীকে বিষয়টি সুরাহার জন্য আদেশ করেন। কিন্ত্ত আশরাফ আলী শিক্ষক গোলাম শারওয়ার মুরশেদের কাছে থেকে মেমো কপির মাধ্যমে পূর্বের চাওয়া ১ হাজার ৫০ টাকার পরিবর্তে দুই হাজার ৯৩৩ টাকা এবং পূর্বের ফরম দেওয়ার দিন ৮৩০ টাকাসহ মোট ৩ হাজার ৭৬৩ টাকা গ্রহন করেন। এবিষয়ে জানতে চাইলে সোনালী ব্যাংক গোদাগাড়ী শাখার ঋণ অনুমোদন কর্মকর্তা আশরাফ আলী বলেন, ঋণ প্রক্রিয়াকরণ ফি ও ১৫% ভ্যাট কর্তন বাবদ দুই হাজার ১৩ টাকা, রেভিনিউ স্টাম্প বাবদ ৯২০ টাকা মোট দুই হাজার ৯৩৩ টাকা খরচ নেওয়া হয়েছে যার মেমো দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বাকী টাকা লোন প্রোসেসিং এর এমাউন্টের ০.৫ % টাকা, সিআইবি ইনকুয়ারী, এনআইডি ইনকুয়ারী ও অন্যকোন ব্যাংকে লোন আছে কিনা এসবের তদন্তের জন্য খরচ কাটার নিয়ম থাকায় তার কাছে এসব খরচ গুলো নেওয়া হয়েছে। এই কর্মকর্তা আরো বলেন আমরা এক হাজার ৫০ টাকাই নিয়ে থাকি কিন্তু যিনি ঋণ নিবেন তিনি এই টাকাটিও দিতে দিনে চান না। তাই নিয়ম অনুযায়ী কত টাকা নেওয়া যাই সেটাই নেওয়া হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক গ্রাহক বলেন, ব্যাংক ম্যানেজার সাইফুল ইসলাম গোদাগাড়ীর স্থানীয় হওয়ায় দাপট দেখিয়ে কাজ করেন এবং গ্রাহকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে থাকেন। এমনকি বড় অঙ্কের টাকা উত্তোলন করতে গেলে একদিন আগে কেনো জানানো হয়নি এমন অজুহাতে গ্রাহক হয়রানি করা হয়। এছাড়াও কাজে ক্রটি থাক বা নাই থাক ঋণ গ্রহণে পদে পদে আর্থিক সুবিধা দেয়া অনেকটা নিয়মে পরিণত হয়েছে। এবিষয়ে গোদাগাড়ী সোনালী ব্যাংক শাখার ম্যানেজার সাইফুল ইসলামের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফেনে যোগাযোগ করা হলে ফোন রিসিভ করেন নি। সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে মোবাইলে ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও কোন সাড়া না পাওয়ায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
Leave a Reply