আশরাফুল ইসলাম গাইবান্ধাঃ গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার ২ নং হোসেনপুর ইউনিয়নের মেরীরহাট বাজারের পাশে ১৯৬৭ সালে স্থাপিত মেরীরহাট উচ্চ বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলামের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে ভেঙ্গে পড়েছে বিদ্যালয়টির শিক্ষার পরিবেশে। নিয়োগ বানিজ্য ও সঠিক সময়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত না হওয়ায় অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
জানা যায়, প্রধান শিক্ষক সহ অন্যান্য শিক্ষকরা সঠিক সময়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত না হওয়ায় বিদ্যালয়টি ঠিক ভাবে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেওয়া হয় না। একারণে শিক্ষার্থীরা নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসে না। তবে ক্লাস না হওয়ায় বিষয়ে কথা বলতে রাজি নয় উপস্থিত শিক্ষার্থীরা,তবে প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকদের দাবী নিয়মিত ক্লাসে পাঠদান করা হয়। প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম দাবী করেন তিনি নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসেন এবং অফিসের কাজ থাকলে বাহিরে যেতে হয়। তিনি আরো বলেন, তার বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থীর পরিমাণ ৪ শতাধিক, শিক্ষক ১০ জন ও কর্মচারী মোট ৫ জন। গত বছর ২০২৩ সালে ৪১ জন পরীক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন এর মধ্যে ১৩ জন শিক্ষার্থী পাশ করেন। এবছর অত্র প্রতিষ্ঠান হতে ৫৩ জন পরীক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ৪ শতাধিক শিক্ষার্থী দাবী করলেও ১৮ ফেব্রুয়ারী রবিবার দুপুরে ক্লাস রুম গুলোতে গিয়ে দেখা যায়, ষষ্ঠ শ্রেনীতে ১৯ জন, সপ্তম শ্রেনীতে ২১ জন, অষ্টম শ্রেনীতে ২৮ জন, দশম শ্রেনী ১৩ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত পাওয়া যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় সচেতন মহল ও অভিভাবকগণ দাবী করেন, বর্তমান প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম এর নিয়োগ বানিজ্য ও নানা অনিয়মে বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হয়ে গেছে। নিয়মিত ক্লাস না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসে না। তারা আরো বলেন, স্থানীয়রা যাতে নিয়োগ বানিজ্য সম্পর্কে জানতে না পারে সে কারণে গোপনে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এবং গোপনে বিদ্যালয় থেকে ২৮ কিলো দুরে গাইবান্ধা ইসলামীয়া হাইস্কুলে গিয়ে নিয়োগ বোর্ড সম্পুর্ন করেছে বলে লোক মুখে জানা যায়।
নিয়োগ বানিজ্যের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম জানান,সকল নিয়ম কানুন মেনে নিয়ম অনুযায়ী গত ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে বিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক,আয়া ও পরিচ্ছন্নকর্মীসহ তিনটি পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নিয়োগ বোর্ড নিজ উপজেলায় বা বিদ্যালয়ে না করে ২৮ কিলো দুরে গাইবান্ধায় গিয়ে নিয়োগ বোর্ড করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন উত্তর দিতে পারেনি। বিদ্যালয়টির পরিচালনা পরিষদের সভাপতি আব্দুল মজিদ সরকার অসুস্থ্য থাকায় তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে পলাশবাড়ী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এএইচএম নকিবুল হাসান এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, মেরীরহাট উচ্চ বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলামের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির এবং স্বেচ্ছাচারিতার তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে সংশ্লিষ্ট সকলের হস্তক্ষেপ কামনা করেন অভিভাবক মহল ও স্থানীয় সচেতন এলাকাবাসী।
Leave a Reply